আলোচ্য বিষয়ঃ
১।খ্রিষ্টধর্মে ক্রুশের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
২।যিশু কি সত্যিই ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন?
৩। খ্রিষ্ট ধুর্মে ক্রুশের প্রমাণ।
৪।যিশু খ্রিষ্টের ক্রুশবিদ্ধ না হওয়ার প্রমাণ।
_____________________________________
১।খ্রিষ্টধর্মে ক্রুশের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
প্যাস্টর রুকনুদ্দিনঃ
প্রথমেই বলতে চাই যে,আমার নাম হল রুকনি।আর এটা হল ‘রুকনুদ্দিন’ নামের অপভ্রংশ।আমি সাধারণত রুকনুদ্দিন শব্দটা ব্যবহার করিনা। অফিশিয়াল কাগজ পত্রেও আমার নাম রুকনি।আমাকে এ নামেই ডাকবেন।যাহোক,আজকের অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলা যেত,কিন্তু এটা সম্ভব হবে না। তাই একটি নির্দিষ্ট বিশয় নির্বাচন করেছি।কারণ এভাবে আমরা নিজেদের মধ্যে পর্যালোচনা চালিয়ে গেলে একে অন্যকে সহজে বুঝতে পারব।এ বিষয়টা নির্বাচনের কারন সম্পর্কে আপনারা জিজ্ঞেস করতে পারেন।আমি তিনটি বিষয় সম্পর্কে বলেছিলাম।উনারা তন্মধ্যে এ বিষয়টিকে নির্বাচন করেছেন। আপনারা হয়তো জানেন যে,এ বিষয়টা খ্রিষ্টধর্ম বিশ্বাসের খুবই মৌলিক একটি বিষয়।এ বিষয়টি নিয়ে খ্রিষ্টান ও মুসলমানদের মধ্যে অনেক মতপার্থক্য আছে।মতপার্থক্য থাকলেও ড জাকির নায়েকের আহবান অনুযায়ী আমি খোলাখুলি কথা বলতে চাই।তবে অবশ্যই একে অন্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শন পূর্বক কথা বলব।তাই এখন আমি ক্রস সম্পর্কে খ্রিষ্টধর্মের বিশ্বাস ও দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করব।
আপনারা আপনাদের পছন্দমত যেটা খুশি গ্রহণ করতে পারবেন এবং যেটা খুশী বর্জন করবেন।..তবে আমরা একে অন্যের দৃষ্টিভঙ্গিকে সম্মান দেখাবো।যদি আমার সাথে একমত নাও হন,সেক্ষেত্রে আপনাকে সম্মান দেখাবো।আর আপনার এ মতামতের প্রতিও আমি সম্মান দেখাবো।এ আলোচনার মধ্যে পবিত্র বাইবেলের কিছু উদ্ধৃতি দিব,কিন্তু সেই উদ্ধৃতিগুলোর কোন reference দিব না।পবিত্র বাইবেল থেকে আমি প্রসঙ্গক্রমে যে সব উদ্ধৃতি দিব-তা শুধু আলোচনার স্বার্থে।মনে রাখবেন,এখানে আমার উদ্দেশ্য আপনাদের বাইবেল মুখস্থ করানো নয়;বরং আমার এখানে আসার উদ্দেশ্য হচ্ছে আপনারা যাতে আমার কথার অর্থ উপলব্ধি করতে পারেন।খ্রিষ্ট ধর্মে ক্রসের গুরুত্ব বুঝতে পারেন এবং
খ্রিষ্টধর্মে ক্রসকে কেন এত গুরুত্ব দেয়া হয়?
এর কারণটা কি?
কেন এই বিষয়টা এত গুরুত্বপুর্ণ?
প্রথমে আমি ক্রস সম্পর্কে কয়েকটি কথা বলতে চাই।ক্রসের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে অনেকেই মনে করেন যে, ক্রস একটি ফ্যাশন।যেমন আমি গেলাম জাবলি বাজারে।তারপর বিভিন্ন দোকানে ক্রস খুঁজতে লাগলাম।অতঃপর ……………
__________________________________
সঙ্গত কারনে আমি প্যাস্টর রুকনুদ্দিনের বক্তব্য লিখা এখানেই শেষ করছি।কারন জাকির নাইকের বক্তব্যে তার প্রতিটি যুক্তির খন্ডন করা হয়েছে।আপনারা সেখান থেকেই রুকনুদ্দিনের পুর্ণ বক্তব্য সম্পর্কে জানতে পারবেন,ইনশাআল্লাহ।
__________________________________
ডক্টর যাকির নাইকঃ
“সমস্ত প্রসংসা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য।দরুদ ও সালাম পেশ করছি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম,তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবীদের উপর।অতঃপর বিতাড়িত তথা অভিশপ্ত শয়তানের থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
মহান আল্লাহর নামে শুরু করছি যিনি পরম দয়ালু ও দয়াবান।আল্লাহ বলেছেন,
“আর তাদের বক্তব্য হচ্ছে যে, “নিশ্চয়ই আমরা ঈসা ইবনে মারিয়ামকে হত্যা করেছি যিনি আল্লাহর একজন রাসুল ছিলেন।”কিন্তু তারা তাকে হত্যা করতে পারেনি;বরং তাদের এরূপ বিভ্রম হয়েছিল।আর যাঁরা তার সম্পর্কে মতভেদ করেছিল তারা দ্বিধাদ্বন্দে ছিল।কারণ তাদের কোন জ্ঞান ছিল না।তারা শুধু অনুমানকেই অনুসরণ করেছে।এটা নিশ্চিত যে তারা তাকে নিশ্চিতভাবেই হত্যা করেনি।”
“হে আমার প্রভু!আমার বক্ষকে উন্মুক্ত করে দিন।আমার বিষয়টাকে সহজ করে দিন।আমার জিহবার জড়তা কাটিয়ে দিন।আমার কথার মর্ম যেন তারা উপলব্ধি করে।”
শ্রদ্ধেয় প্যাস্টর রুকনুদ্দিন অথবা তিনি যেভাবে পছন্দ করেন প্যাস্টর রুকনি,হেনরি পিও,প্যাস্টর সাজি, এছাড়াও বোম্বের বিভিন্ন চার্চের প্যাস্টর ভাইয়েরা,শ্রদ্ধেয় গুরুজন এবং প্রিয় ভাই ও বোনেরা আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই ইসলামিক সম্ভাষণে-
“আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রাহ্মাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু”
(আল্লাহর দয়া।শান্তি এবং রহমত আপনাদের সবার উপর বর্ষিত হোক।)
আজকের আলোচনা শুরু করার আগে আমি পরিষ্কার করতে চাই যে, ধর্মে যিশুখ্রিষ্টকে আমরা মুসলমানরা কিভাবে দেখি?
ইসলাম হল একমাত্র অখ্রিষ্টান ধর্ম,যে ধর্মে যীশু খ্রিষ্টকে নবী বলে বিশ্বাস করা হয়।সে আসলে মুসলিম না যে যীশু খ্রিষ্টকে নবী বলে স্বীকার করে না।আমরা বিশ্বাস করি যে তিনি আল্লাহর খুব গুরুত্বপুর্ন নবীদের মধ্যে অন্যতম। তিনি একজন গুরুত্বপুর্ন রাসুলও।আমরা বিশ্বাস করি যে তিনি একজন মাসেহ অর্থাৎ খ্রিষ্ট।এটাও আমরা মানি যে,তিনি অলৌকিক ভাবে জন্মগ্রহন করেছিলেন।কোন পুরুষের ঔরসজাত না হয়েই তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন।যেটা অনেক আধুনিক খ্রিষ্টানরাও বিশ্বাস করে না।আমরা এটাও মানি যে তিনি আল্লাহর আদেশে মৃতকে জীবিত করেছেন।তিনি আল্লাহ তা’আলার আদেশে কুষ্ঠ রোগীকে সুস্থ করেছেন।
এখন প্রশ্ন করতে পারেন যে, যদি মুসলিম ও খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারীরা দু’দলই যীশুকে ভালবাসেন এবং শ্রদ্ধা করেন তাহলে আপনাদের মধ্যে পার্থক্যটা কোথায়?
হ্যাঁ। পার্থক্য আছে।পার্থক্যটা হল খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারীরা যীশু খ্রীষ্টকে মনে করে যে, তিনিই হলেন ঈশ্বর।আর তারা বলে যে,যীশু ক্রুশ বিদ্ধ হয়েছিলেন।আর তিনি মানুষের পাপের জন্য মারা গিয়েছেন।আজকের আলোচনার বিষয় বস্তু মনে হয় আপনাদের মনে আছে,(যীশু কি সত্যি ক্রুশ বিদ্ধ হয়েছিলেন?)
যেহেতু আমরা মুসলিম আর খীষ্টান উভয় পক্ষই যীশু খ্রীষ্টকে মানি,তাই আমি উভয়ের দৃষ্টিভঙ্গিটা বলতে চাই,মুসলিম আর খ্রীষ্টানরা এ বিষয়টাকে কিভাবে মূলয়ায়ন করে।
মুসলিমদের দৃষ্টিভঙ্গির কথা যদি বলতে হয়,তাহলে শুরুতেই যা বলতে হবে, তা হচ্ছে মুসলমানদের নিকট সবচেয়ে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ হল আসমানি কিতাব পবিত্র কুরান।আজকের বকতৃতার শুরুতেই আমি মহা পবিত্র কুরানের একটি আয়াত তিলাওয়াত করেছিলাম।পবিত্র কুরানের সুরা নিসার ১৫৭ আয়াত এটি।সেখানে পরিস্কার করে বলা হয়েছে আজকের বিতর্কের বিষয়বস্তুটা সম্পর্কে।আপনারা জানেন যে, আমাদের আজকের আলোচক প্যাস্টর রুকনি একজন আরব খ্রীষ্টান মিশনারী।উনার মাত্রৃভাষা আরবি।সে জন্য আমার উদ্ধৃত আয়াতটির অনুবাদ উনাকে বলার কোন প্রয়োজন নেই।এ আয়াতের মাধ্যমেই তিনি যীশু খীষ্টের খুশ বিদ্ধ হওয়ার ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গিটা আশা করি বুঝতে পেরেছেন।তবে এখানে উপস্থিত বেশিরভাগ মানুষই আরবি ভাষা বোঝেননা।কারন আরবি আমাদের মাতৃভাষা নয়।এখন আমি তাদের জন্য সুরা নিসার ১৫৭ নম্বর আয়াতটির অনুবাদ পেশ করছি।যেমনঃ
“আর তারা (ইহুদিরা দম্ভ করে) বলেছে,”আম্বিয়া মরিয়মের পুত্র ঈসা যিনি একজন আল্লাহর রাসুল ছিলেন তাকে হত্যা করেছি।আর তারা তাকে হত্যাও করেনি এবং ক্রুশ বিদ্ধও করেনি।বরং তাদের এরুপ বিভ্রম হয়েছিল।আর যারা তাঁর সম্পর্কে মতভেদ করেছিল তারা দ্বিধা দ্বন্দ্বে ছিল এবং তাদের কোন জ্ঞান ছিলো না।শুধু অনুমানকেই অনুসরণ করেছে।এটা নিশ্চিত যে,তারা তাকে হত্যা করেনি। “
পবিত্র কুরানের এ আয়াতটা স্পষ্ট করে বলেছে যে, যীশু খ্রীষ্টকে হত্যা করা হয়নি।সুতরাং আজকের আলোচনার বিষয় বস্তু সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টী ভঙ্গি হচ্ছে,
“তারা তাকে হত্যাও করেনি এবং ক্রুশ বিদ্ধও করেনি।”
“এটা নিশ্চিত যে,তারা তাকে হত্যা করেনি। ”
এখানে পবিত্র কুরানের বক্তব্য খুবই স্পষ্ট ও পরিস্কার।সুরা নিসার এ আয়াত পরিস্কার করেই বলেছে যে, তাকে হত্যা করা হয় নি।আমি যদি এখানেই আমার বক্তব্য শেষ করি এবং আমাদের প্যাস্টর যা যা বলেছেন তার উত্তরে যদি দু’ চার কথা না বলি বা তার যুক্তি যদি খন্ডন না করি তাহলে আজকের বিতর্ক অনুষ্ঠান ড্র হয়ে যাবে।
অর্থাৎ,আলোচনার ফলাফল অমিমাংসিত থেকে যাবে।মুসলিমরা বিশ্বাস করে পবিত্র কুরানের বক্তব্য অনুযায়ী যীশু খ্রীষ্টকে আসলে কখনই ক্রুশবিদ্ধ করা হয় নি।
এর পর আমি বলতে চাই যে,আমরা মুসলমানরা বিশ্বাস করি,খ্রীষ্টানদের বাইবেল ঈশ্বরের বাণী নয়।বড়জোর এতটুকু বিশ্বাস করতে পারি যে, বাইবেলে এমন কিছু কথা থাকতে পারে যেটুকুকে আমরা ঈশ্বরের বাণী হিসেবে ধরে নিতে পারি।তাছাড়া আপনারা যখন বাইবেল পড়বেন তখন লক্ষ্য করবেন যে, উহাতে অবাস্তব গল্প,অশ্লীল কথাবার্তা বিদ্যমান আছে।কোনটির ভাষা এতই নংরা যে, কেউ যদি আমাকে হাজার টাকাও দেয় তবুও আমি সেসব কথা মুখে উচ্চারণ করতে পারবনা।বাইবেলে এ ধরনের অশ্লীল কথা আছে।এছাড়া বাইবেলে পরস্পর বিরোধী কথা বার্তা রয়েছে।যদিও আমি বিশ্বাস করিনা যে,বাইবেল ঈশ্বরের বাণী।তার পরও আমি বাইবেল দিয়েই প্রমান করতে চাই যে, যীশু খ্রীষ্ট আসলে কখনই ক্রুশবিদ্ধ হন নি।কারন প্যাস্টর রুকনি আর এখানে উপস্থিত খ্রীষ্টানরা মনে করেন এবং বিশ্বাস করেন যে, বাইবেল ঈশ্বরের বানী।সুতরাং আমি,তাদের ধর্ম গ্রন্থ দিয়েই প্রমাণ করব যে,যীশু খ্রীষ্ট কখনই ক্রুশবিদ্ধ হননি।এছাড়া পবিত্র কুরানের সুরা বাকারার ১১১ নম্বর আয়াতে উল্লেখ কথা হয়েছে যে,
“আর তারা(ইহুদি ও খ্রীষ্টানরা) বলে যে, ইহুদি ও খ্রিষ্টান ব্যতীত কেউই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা।”
ইতোপুর্বে প্যাস্টরও বললেন, যত ভাল কাজই করেন আপনি পাপ মুক্ত হতে পারবেননা।কোন কাজ হবে না।যতই যাকাত দেন,হজ্জ করেন,নামায পড়েন আর যতই কপালে দাগ পড়ুক,জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেননা।যদি আপনি ইহুদি বা খ্ররেইষ্টান না হন।তবে এ আয়াতের শেষে আল্লাহ এটাও বলেছেন,
“এটা তাদের মিথ্যা আশা।আপনি তাদের বলুন! তোমরা প্রমাণ পেশ কর,যদি তোমরা সত্যবাদী হও।”
আল্লাহ মুসলমানদের নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তাদেরকে প্রমাণ পেশ করতে বল। যদি আমি করান থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলি যে, করান আল্লাহর বাণী সে জন্য একই ভাবে তাদেরকেও বলব যে-
তোমাদের প্রমাণ দেখাও,যদি সত্যবাদী হয়ে থাক।এখানে খ্রীষ্টানরা প্রমাণ হিসেবে দেয় এ বাইবেলকে।এটা তাদের বুরহান বা সুস্পষ্ট দলীল।খীষ্টানরা এমনও বলে যে, আমার বাইবেল এটা বলেছে,আমার বাইবেল ওটা বলেছে।বাইবেল উমুক কথা আছে,তমুক কথা আছে। আসুন তাহলে এবার দেখি বাইবেলে আসলে কি বলা হয়েছে?
আপনারা হয়ত জানেন যে, পবিত্র বাইবেল পৃথিবীর ২০০০ হাজারেরো বেশি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে।তাহলে এবার আসুন দেখি, বাইবেলের বক্তব্য অনুসারেই যীশু খ্রীষ্টকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছে কিনা?আর এ বাইবেল থেকে আমি যে উপসংহারেই আসি না কেন ইসলামী দৃষ্টিভংগী যে তেমনি হবে এমনটা ভাবা কিন্তু ঠিক হবে না।
আমি আবারো স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, বাইবেলের উপসংহার আর ইসলামী দৃষ্টিভংগী এক নাও হতে পারে।
_______________________________________________________________
ইসলামী দৃষ্টিভংগীটা য়ামি পরিস্কার করে বলেছি যে,পবিত্র কুরানের সুরা নিসার ১৫৭ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে।
“তারা তাকে হত্যা করেনি এবং তাকে ক্রুশবিদ্ধও করেনি”
এটা অত্যন্ত পরিস্কার ঘোষণা।এখন আজকের আমাদের আলোচনার বিষয় “Was Christ Really Crucified?”
এখন এ ইংরেজী শব্দ Crucify এর অর্থ কি?
Oxford Dictionary অনুযায়ী “Crucify” কাউকে মৃত্যু দন্ড দেয়া একটা ক্রসের সাথে তাকে বেঁধে রেখে। আর Webster Dictionary অনুযায়ী “Crucify” অর্থ কাউকে ক্রসের সাথে পেরেক ঠুকে অথবা বেঁধে মৃত্য দন্ড দেয়া।এক কথায়, কাউকে যদি ক্রুসিফাই করা হয় তাহলে সে ক্রসেই মারা যাবে। যদি সে ক্রুশে মারা না যায় তাহলে সে ক্রুসিফাইও হয়নি বলে ধরে নিতে হবে।
এখন Resurrection (পুনরুত্থান) শব্দটার অর্থ কি?
Oxford Dictionary অনুযায়ী এর অর্থ কোন কাজ বা ঘটনা যেখানে মৃত লোক জীবিত হয়।বড় হাতের R দিয়ে লিখা Resurrection শব্দের অর্থ খ্রীষ্ট মৃত থেকে জীবিত হয়েছেন।আর Webster Dictionary অনুযায়ী Resurrection অর্থ যে ঘটনায় মৃত মানুষ জীবিত হয়।কিন্তু বড় হাতের R দিয়ে লিখা Resurrection শব্দের অর্থ যীশু খ্রীষ্টের মৃত্যু আর সমাধির পরে তার পুনরায় জীবিত হওয়ার ঘটনা।
এক কথায়, যীশুর পুনরুত্থান হয়ে গেলে তাকে মারা যেতে হবে।যদি মারা না যান তিনি পুনরুত্থিত হবেননা।
আশাকরি আপনারা এই সংজ্ঞাগুলো ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছেন।
চলবে ইনশাআল্লাহ।
১।খ্রিষ্টধর্মে ক্রুশের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
২।যিশু কি সত্যিই ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন?
৩। খ্রিষ্ট ধুর্মে ক্রুশের প্রমাণ।
৪।যিশু খ্রিষ্টের ক্রুশবিদ্ধ না হওয়ার প্রমাণ।
_____________________________________
১।খ্রিষ্টধর্মে ক্রুশের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
প্যাস্টর রুকনুদ্দিনঃ
প্রথমেই বলতে চাই যে,আমার নাম হল রুকনি।আর এটা হল ‘রুকনুদ্দিন’ নামের অপভ্রংশ।আমি সাধারণত রুকনুদ্দিন শব্দটা ব্যবহার করিনা। অফিশিয়াল কাগজ পত্রেও আমার নাম রুকনি।আমাকে এ নামেই ডাকবেন।যাহোক,আজকের অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলা যেত,কিন্তু এটা সম্ভব হবে না। তাই একটি নির্দিষ্ট বিশয় নির্বাচন করেছি।কারণ এভাবে আমরা নিজেদের মধ্যে পর্যালোচনা চালিয়ে গেলে একে অন্যকে সহজে বুঝতে পারব।এ বিষয়টা নির্বাচনের কারন সম্পর্কে আপনারা জিজ্ঞেস করতে পারেন।আমি তিনটি বিষয় সম্পর্কে বলেছিলাম।উনারা তন্মধ্যে এ বিষয়টিকে নির্বাচন করেছেন। আপনারা হয়তো জানেন যে,এ বিষয়টা খ্রিষ্টধর্ম বিশ্বাসের খুবই মৌলিক একটি বিষয়।এ বিষয়টি নিয়ে খ্রিষ্টান ও মুসলমানদের মধ্যে অনেক মতপার্থক্য আছে।মতপার্থক্য থাকলেও ড জাকির নায়েকের আহবান অনুযায়ী আমি খোলাখুলি কথা বলতে চাই।তবে অবশ্যই একে অন্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শন পূর্বক কথা বলব।তাই এখন আমি ক্রস সম্পর্কে খ্রিষ্টধর্মের বিশ্বাস ও দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করব।
আপনারা আপনাদের পছন্দমত যেটা খুশি গ্রহণ করতে পারবেন এবং যেটা খুশী বর্জন করবেন।..তবে আমরা একে অন্যের দৃষ্টিভঙ্গিকে সম্মান দেখাবো।যদি আমার সাথে একমত নাও হন,সেক্ষেত্রে আপনাকে সম্মান দেখাবো।আর আপনার এ মতামতের প্রতিও আমি সম্মান দেখাবো।এ আলোচনার মধ্যে পবিত্র বাইবেলের কিছু উদ্ধৃতি দিব,কিন্তু সেই উদ্ধৃতিগুলোর কোন reference দিব না।পবিত্র বাইবেল থেকে আমি প্রসঙ্গক্রমে যে সব উদ্ধৃতি দিব-তা শুধু আলোচনার স্বার্থে।মনে রাখবেন,এখানে আমার উদ্দেশ্য আপনাদের বাইবেল মুখস্থ করানো নয়;বরং আমার এখানে আসার উদ্দেশ্য হচ্ছে আপনারা যাতে আমার কথার অর্থ উপলব্ধি করতে পারেন।খ্রিষ্ট ধর্মে ক্রসের গুরুত্ব বুঝতে পারেন এবং
খ্রিষ্টধর্মে ক্রসকে কেন এত গুরুত্ব দেয়া হয়?
এর কারণটা কি?
কেন এই বিষয়টা এত গুরুত্বপুর্ণ?
প্রথমে আমি ক্রস সম্পর্কে কয়েকটি কথা বলতে চাই।ক্রসের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে অনেকেই মনে করেন যে, ক্রস একটি ফ্যাশন।যেমন আমি গেলাম জাবলি বাজারে।তারপর বিভিন্ন দোকানে ক্রস খুঁজতে লাগলাম।অতঃপর ……………
__________________________________
সঙ্গত কারনে আমি প্যাস্টর রুকনুদ্দিনের বক্তব্য লিখা এখানেই শেষ করছি।কারন জাকির নাইকের বক্তব্যে তার প্রতিটি যুক্তির খন্ডন করা হয়েছে।আপনারা সেখান থেকেই রুকনুদ্দিনের পুর্ণ বক্তব্য সম্পর্কে জানতে পারবেন,ইনশাআল্লাহ।
__________________________________
ডক্টর যাকির নাইকঃ
“সমস্ত প্রসংসা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য।দরুদ ও সালাম পেশ করছি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম,তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবীদের উপর।অতঃপর বিতাড়িত তথা অভিশপ্ত শয়তানের থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
মহান আল্লাহর নামে শুরু করছি যিনি পরম দয়ালু ও দয়াবান।আল্লাহ বলেছেন,
“আর তাদের বক্তব্য হচ্ছে যে, “নিশ্চয়ই আমরা ঈসা ইবনে মারিয়ামকে হত্যা করেছি যিনি আল্লাহর একজন রাসুল ছিলেন।”কিন্তু তারা তাকে হত্যা করতে পারেনি;বরং তাদের এরূপ বিভ্রম হয়েছিল।আর যাঁরা তার সম্পর্কে মতভেদ করেছিল তারা দ্বিধাদ্বন্দে ছিল।কারণ তাদের কোন জ্ঞান ছিল না।তারা শুধু অনুমানকেই অনুসরণ করেছে।এটা নিশ্চিত যে তারা তাকে নিশ্চিতভাবেই হত্যা করেনি।”
“হে আমার প্রভু!আমার বক্ষকে উন্মুক্ত করে দিন।আমার বিষয়টাকে সহজ করে দিন।আমার জিহবার জড়তা কাটিয়ে দিন।আমার কথার মর্ম যেন তারা উপলব্ধি করে।”
শ্রদ্ধেয় প্যাস্টর রুকনুদ্দিন অথবা তিনি যেভাবে পছন্দ করেন প্যাস্টর রুকনি,হেনরি পিও,প্যাস্টর সাজি, এছাড়াও বোম্বের বিভিন্ন চার্চের প্যাস্টর ভাইয়েরা,শ্রদ্ধেয় গুরুজন এবং প্রিয় ভাই ও বোনেরা আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই ইসলামিক সম্ভাষণে-
“আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রাহ্মাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু”
(আল্লাহর দয়া।শান্তি এবং রহমত আপনাদের সবার উপর বর্ষিত হোক।)
আজকের আলোচনা শুরু করার আগে আমি পরিষ্কার করতে চাই যে, ধর্মে যিশুখ্রিষ্টকে আমরা মুসলমানরা কিভাবে দেখি?
ইসলাম হল একমাত্র অখ্রিষ্টান ধর্ম,যে ধর্মে যীশু খ্রিষ্টকে নবী বলে বিশ্বাস করা হয়।সে আসলে মুসলিম না যে যীশু খ্রিষ্টকে নবী বলে স্বীকার করে না।আমরা বিশ্বাস করি যে তিনি আল্লাহর খুব গুরুত্বপুর্ন নবীদের মধ্যে অন্যতম। তিনি একজন গুরুত্বপুর্ন রাসুলও।আমরা বিশ্বাস করি যে তিনি একজন মাসেহ অর্থাৎ খ্রিষ্ট।এটাও আমরা মানি যে,তিনি অলৌকিক ভাবে জন্মগ্রহন করেছিলেন।কোন পুরুষের ঔরসজাত না হয়েই তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন।যেটা অনেক আধুনিক খ্রিষ্টানরাও বিশ্বাস করে না।আমরা এটাও মানি যে তিনি আল্লাহর আদেশে মৃতকে জীবিত করেছেন।তিনি আল্লাহ তা’আলার আদেশে কুষ্ঠ রোগীকে সুস্থ করেছেন।
এখন প্রশ্ন করতে পারেন যে, যদি মুসলিম ও খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারীরা দু’দলই যীশুকে ভালবাসেন এবং শ্রদ্ধা করেন তাহলে আপনাদের মধ্যে পার্থক্যটা কোথায়?
হ্যাঁ। পার্থক্য আছে।পার্থক্যটা হল খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারীরা যীশু খ্রীষ্টকে মনে করে যে, তিনিই হলেন ঈশ্বর।আর তারা বলে যে,যীশু ক্রুশ বিদ্ধ হয়েছিলেন।আর তিনি মানুষের পাপের জন্য মারা গিয়েছেন।আজকের আলোচনার বিষয় বস্তু মনে হয় আপনাদের মনে আছে,(যীশু কি সত্যি ক্রুশ বিদ্ধ হয়েছিলেন?)
যেহেতু আমরা মুসলিম আর খীষ্টান উভয় পক্ষই যীশু খ্রীষ্টকে মানি,তাই আমি উভয়ের দৃষ্টিভঙ্গিটা বলতে চাই,মুসলিম আর খ্রীষ্টানরা এ বিষয়টাকে কিভাবে মূলয়ায়ন করে।
মুসলিমদের দৃষ্টিভঙ্গির কথা যদি বলতে হয়,তাহলে শুরুতেই যা বলতে হবে, তা হচ্ছে মুসলমানদের নিকট সবচেয়ে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ হল আসমানি কিতাব পবিত্র কুরান।আজকের বকতৃতার শুরুতেই আমি মহা পবিত্র কুরানের একটি আয়াত তিলাওয়াত করেছিলাম।পবিত্র কুরানের সুরা নিসার ১৫৭ আয়াত এটি।সেখানে পরিস্কার করে বলা হয়েছে আজকের বিতর্কের বিষয়বস্তুটা সম্পর্কে।আপনারা জানেন যে, আমাদের আজকের আলোচক প্যাস্টর রুকনি একজন আরব খ্রীষ্টান মিশনারী।উনার মাত্রৃভাষা আরবি।সে জন্য আমার উদ্ধৃত আয়াতটির অনুবাদ উনাকে বলার কোন প্রয়োজন নেই।এ আয়াতের মাধ্যমেই তিনি যীশু খীষ্টের খুশ বিদ্ধ হওয়ার ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গিটা আশা করি বুঝতে পেরেছেন।তবে এখানে উপস্থিত বেশিরভাগ মানুষই আরবি ভাষা বোঝেননা।কারন আরবি আমাদের মাতৃভাষা নয়।এখন আমি তাদের জন্য সুরা নিসার ১৫৭ নম্বর আয়াতটির অনুবাদ পেশ করছি।যেমনঃ
“আর তারা (ইহুদিরা দম্ভ করে) বলেছে,”আম্বিয়া মরিয়মের পুত্র ঈসা যিনি একজন আল্লাহর রাসুল ছিলেন তাকে হত্যা করেছি।আর তারা তাকে হত্যাও করেনি এবং ক্রুশ বিদ্ধও করেনি।বরং তাদের এরুপ বিভ্রম হয়েছিল।আর যারা তাঁর সম্পর্কে মতভেদ করেছিল তারা দ্বিধা দ্বন্দ্বে ছিল এবং তাদের কোন জ্ঞান ছিলো না।শুধু অনুমানকেই অনুসরণ করেছে।এটা নিশ্চিত যে,তারা তাকে হত্যা করেনি। “
পবিত্র কুরানের এ আয়াতটা স্পষ্ট করে বলেছে যে, যীশু খ্রীষ্টকে হত্যা করা হয়নি।সুতরাং আজকের আলোচনার বিষয় বস্তু সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টী ভঙ্গি হচ্ছে,
“তারা তাকে হত্যাও করেনি এবং ক্রুশ বিদ্ধও করেনি।”
“এটা নিশ্চিত যে,তারা তাকে হত্যা করেনি। ”
এখানে পবিত্র কুরানের বক্তব্য খুবই স্পষ্ট ও পরিস্কার।সুরা নিসার এ আয়াত পরিস্কার করেই বলেছে যে, তাকে হত্যা করা হয় নি।আমি যদি এখানেই আমার বক্তব্য শেষ করি এবং আমাদের প্যাস্টর যা যা বলেছেন তার উত্তরে যদি দু’ চার কথা না বলি বা তার যুক্তি যদি খন্ডন না করি তাহলে আজকের বিতর্ক অনুষ্ঠান ড্র হয়ে যাবে।
অর্থাৎ,আলোচনার ফলাফল অমিমাংসিত থেকে যাবে।মুসলিমরা বিশ্বাস করে পবিত্র কুরানের বক্তব্য অনুযায়ী যীশু খ্রীষ্টকে আসলে কখনই ক্রুশবিদ্ধ করা হয় নি।
এর পর আমি বলতে চাই যে,আমরা মুসলমানরা বিশ্বাস করি,খ্রীষ্টানদের বাইবেল ঈশ্বরের বাণী নয়।বড়জোর এতটুকু বিশ্বাস করতে পারি যে, বাইবেলে এমন কিছু কথা থাকতে পারে যেটুকুকে আমরা ঈশ্বরের বাণী হিসেবে ধরে নিতে পারি।তাছাড়া আপনারা যখন বাইবেল পড়বেন তখন লক্ষ্য করবেন যে, উহাতে অবাস্তব গল্প,অশ্লীল কথাবার্তা বিদ্যমান আছে।কোনটির ভাষা এতই নংরা যে, কেউ যদি আমাকে হাজার টাকাও দেয় তবুও আমি সেসব কথা মুখে উচ্চারণ করতে পারবনা।বাইবেলে এ ধরনের অশ্লীল কথা আছে।এছাড়া বাইবেলে পরস্পর বিরোধী কথা বার্তা রয়েছে।যদিও আমি বিশ্বাস করিনা যে,বাইবেল ঈশ্বরের বাণী।তার পরও আমি বাইবেল দিয়েই প্রমান করতে চাই যে, যীশু খ্রীষ্ট আসলে কখনই ক্রুশবিদ্ধ হন নি।কারন প্যাস্টর রুকনি আর এখানে উপস্থিত খ্রীষ্টানরা মনে করেন এবং বিশ্বাস করেন যে, বাইবেল ঈশ্বরের বানী।সুতরাং আমি,তাদের ধর্ম গ্রন্থ দিয়েই প্রমাণ করব যে,যীশু খ্রীষ্ট কখনই ক্রুশবিদ্ধ হননি।এছাড়া পবিত্র কুরানের সুরা বাকারার ১১১ নম্বর আয়াতে উল্লেখ কথা হয়েছে যে,
“আর তারা(ইহুদি ও খ্রীষ্টানরা) বলে যে, ইহুদি ও খ্রিষ্টান ব্যতীত কেউই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা।”
ইতোপুর্বে প্যাস্টরও বললেন, যত ভাল কাজই করেন আপনি পাপ মুক্ত হতে পারবেননা।কোন কাজ হবে না।যতই যাকাত দেন,হজ্জ করেন,নামায পড়েন আর যতই কপালে দাগ পড়ুক,জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেননা।যদি আপনি ইহুদি বা খ্ররেইষ্টান না হন।তবে এ আয়াতের শেষে আল্লাহ এটাও বলেছেন,
“এটা তাদের মিথ্যা আশা।আপনি তাদের বলুন! তোমরা প্রমাণ পেশ কর,যদি তোমরা সত্যবাদী হও।”
আল্লাহ মুসলমানদের নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তাদেরকে প্রমাণ পেশ করতে বল। যদি আমি করান থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলি যে, করান আল্লাহর বাণী সে জন্য একই ভাবে তাদেরকেও বলব যে-
তোমাদের প্রমাণ দেখাও,যদি সত্যবাদী হয়ে থাক।এখানে খ্রীষ্টানরা প্রমাণ হিসেবে দেয় এ বাইবেলকে।এটা তাদের বুরহান বা সুস্পষ্ট দলীল।খীষ্টানরা এমনও বলে যে, আমার বাইবেল এটা বলেছে,আমার বাইবেল ওটা বলেছে।বাইবেল উমুক কথা আছে,তমুক কথা আছে। আসুন তাহলে এবার দেখি বাইবেলে আসলে কি বলা হয়েছে?
আপনারা হয়ত জানেন যে, পবিত্র বাইবেল পৃথিবীর ২০০০ হাজারেরো বেশি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে।তাহলে এবার আসুন দেখি, বাইবেলের বক্তব্য অনুসারেই যীশু খ্রীষ্টকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছে কিনা?আর এ বাইবেল থেকে আমি যে উপসংহারেই আসি না কেন ইসলামী দৃষ্টিভংগী যে তেমনি হবে এমনটা ভাবা কিন্তু ঠিক হবে না।
আমি আবারো স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, বাইবেলের উপসংহার আর ইসলামী দৃষ্টিভংগী এক নাও হতে পারে।
_______________________________________________________________
ইসলামী দৃষ্টিভংগীটা য়ামি পরিস্কার করে বলেছি যে,পবিত্র কুরানের সুরা নিসার ১৫৭ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে।
“তারা তাকে হত্যা করেনি এবং তাকে ক্রুশবিদ্ধও করেনি”
এটা অত্যন্ত পরিস্কার ঘোষণা।এখন আজকের আমাদের আলোচনার বিষয় “Was Christ Really Crucified?”
এখন এ ইংরেজী শব্দ Crucify এর অর্থ কি?
Oxford Dictionary অনুযায়ী “Crucify” কাউকে মৃত্যু দন্ড দেয়া একটা ক্রসের সাথে তাকে বেঁধে রেখে। আর Webster Dictionary অনুযায়ী “Crucify” অর্থ কাউকে ক্রসের সাথে পেরেক ঠুকে অথবা বেঁধে মৃত্য দন্ড দেয়া।এক কথায়, কাউকে যদি ক্রুসিফাই করা হয় তাহলে সে ক্রসেই মারা যাবে। যদি সে ক্রুশে মারা না যায় তাহলে সে ক্রুসিফাইও হয়নি বলে ধরে নিতে হবে।
এখন Resurrection (পুনরুত্থান) শব্দটার অর্থ কি?
Oxford Dictionary অনুযায়ী এর অর্থ কোন কাজ বা ঘটনা যেখানে মৃত লোক জীবিত হয়।বড় হাতের R দিয়ে লিখা Resurrection শব্দের অর্থ খ্রীষ্ট মৃত থেকে জীবিত হয়েছেন।আর Webster Dictionary অনুযায়ী Resurrection অর্থ যে ঘটনায় মৃত মানুষ জীবিত হয়।কিন্তু বড় হাতের R দিয়ে লিখা Resurrection শব্দের অর্থ যীশু খ্রীষ্টের মৃত্যু আর সমাধির পরে তার পুনরায় জীবিত হওয়ার ঘটনা।
এক কথায়, যীশুর পুনরুত্থান হয়ে গেলে তাকে মারা যেতে হবে।যদি মারা না যান তিনি পুনরুত্থিত হবেননা।
আশাকরি আপনারা এই সংজ্ঞাগুলো ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছেন।
চলবে ইনশাআল্লাহ।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন