শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

জবাব এটা সর্বজন বিদিত যে, শুকুর মাংস ভক্ষণ ইসলামে নিষিদ্ধ। নিম্নে বর্ণিত বিষয়গুলো এই নিষিদ্ধতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরবে। ক. কুরআনে শুকুর মাংস নিষিদ্ধতা শুকুরের মাংস খাওয়া নিষেধঅন্তত চারটি স্থানে উল্লেখ করা হয়েছে ২:১৭৩, ৫:৩, ৬:১৪৫, এবং ১৬:১১৫। “নিষিদ্ধ করা হলো তোমাদের জন্য (খাদ্য- হিসেবে) মৃত জন্তুর মাংস, প্রবাহিত রক্ত, শুকুরের মাংস কেন নিষেধ করা হয়েছে তার সন্তোষজনক উত্তরের জন্য কুরআনের উল্লেখিত আয়াত সমূহেই যথেষ্ট। খ. বাইবেল শুকুর মাংস ভক্ষণের নিষিদ্ধতা একজন খ্রীস্টান তার ধর্মগ্রন্থ সমূহের উল্লেখ দেখে সন্তুষ্ট হলে দেখতে পাবে যে, বাইবেল ‘লেভীটিকাস্থ গ্রন্থে শুকুরের মাংস খেতে নিষেধ করেছে। বলা হয়েছেঃ এবং শুকুর যদিও তার খুর দ্বিখন্ডিত এবং খুরযুক্ত পদ বিশিষ্ট। এমন কি সে চিবিয়ে খায়, যাবর কাটেনা। (তবু) ওটা অপরিচ্ছন্ন (অপবিত্র) তোমার জন্য”। একই গ্রন্থের ১১ অধ্যায় ৭ ও ৮ স্তবকে বলা হয়েছেঃ ওগুলোর মাংস তুমি খাবে না এবং ওগুলোর মৃতদেরহ তুমি স্পর্শও করবে না, ওগুলো ‘অপবিত্র’ তোমার জন্য। বাইবেলের পঞ্চম গ্রন্থ ‘ডিউট্যারনমী’ তেও শুকর মাংস ‘অপবিত্র’ বলা হয়েছেঃ “আর শুকর- কারণ তার খুর দ্বিখন্ডিত, এমনকি চিবিয়ে খায়, যাবর কাটেনা, ওটা অপবিত্র তোমার জন্য তুমি ওগুলোর মাংস খাবে না, না ওগুলোর মৃতদেহ তুমি স্পর্শ করবে। (ডিউট্যারনমীঃ ১৪:৮) বাইবেলের ‘আইযায়াহ, গ্রন্থের ৬৫ অধ্যায় ২ থেকে ৫ স্তবকেও একই নিষিদ্ধতা। গ. শুকর মাংস ভক্ষণ বেশ কিছু মারাত্নক রোগের কারণ অন্যান্য অমুসলিম ও নাস্তিকরা হয়তো উপযুক্ত কারণ ও বিজ্ঞানের যুক্তি প্রমাণের মেনে নিতে পারে- শুকুর মাংস ভক্ষণ কমপক্ষে সত্তুরটি রোগের উদ্ভব ঘটাতে পারে। প্রথমতঃ আক্রান্ত হতে পারে বিভিন্ন প্রকার ক্রিমির দ্বারা। যেমন বৃত্তাকার ক্রিমি, ক্ষুদ্র কাঁটাযুক্ত ক্রিমি এবং বক্র ক্রিমি। এর মধ্যে সবচাইতে ভয়ঙ্কর ও মারাত্মক হলো ‘টাইনিয়া সোলিয়াম’। সাধারণভাবে যেটাকে ফিতা ক্রিমি’ বলা হয়। এটা পেটের মধ্যে বেড়ে ওঠে এবং অনেক লম্বা হয়। এর ডিম রক্ত প্রবাহে প্রবেশ করে এবং দেহের প্রায় সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গে ঢুকে পড়তে পারে, যদি এটা মস্তিস্কে ঢোকে, তাহলে কারণ ঘটাতে পারে স্মৃতি ভ্রষ্ট হয়ে যাবার। হৃদ-যন্ত্রের মধ্যে ঢুকলে বন্ধ করে দিতে পারে হৃদযন্ত্রক্রিয়া। চোখে ঢুকতে পারলে অন্ধত্বের কারণ , কলিজীতে ঢুকতে পারলে সেখানে মারাত্মক ক্ষতের সৃষ্টি করে অর্থাৎ এটা শরীরের যে কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কর্মক্ষমতাকে ধ্বংস করে দিতে পারে। এরপরও আছে আরো ভয়ঙ্কর ‘ত্রীচুরা টিচুরাসীস্থ। এ সম্পর্কে একটা সাধারণ ধারণা হলো ভালো করে রান্না করলে এর ডিম্ব মারা যায়। এর ওপরে আমেরিকায় গবেষণা চালানো হয়েছে। ফলাফল ভালো করে রান্না করার পরও প্রতি ২৪ জনের ২২ জন এই ‘ত্রীচুরাসীস্থ দ্বারা আক্রান্ত। প্রমাণিত হলো সাধারণ রান্নায় এ ডিম্ব ধ্বংস হয় না। ঘ. শুকর মাংসে চর্বি উৎপাদনের উপাদান প্রচুর শুকর মাংসে পেশী তৈরীর উপাদান অত্যন্ত নগণ্য পরিমাণ। পক্ষান্তরে চর্বি উৎপাদনের উপাদান প্রচুর। এ জাতীয় চর্বি বেশিরভাগ রক্ত নালীতে জমা হয়- যা কারণ ঘটায় হাইপার টেনশান এবং হার্ট এটাকের। অবাক হবার কিছু নেই যে ৫০% ভাগ আমেরিকান হাইপার টেনশানের রুগী। ঙ. পৃথিবীর বুকে শুকর নোংরা ও পঙ্কিলতম প্রাণী এ প্রাণীটি বসবাস করতে সাচ্ছন্দ বোধ করে নিজেদের বিষ্ঠা, মানুষের মল ও ময়লাপূর্ণ জায়গায়। আল্লাহ তা‘আলা সমাজবদ্ধ সৃষ্টি কূলের ধাঙর, মেথর বা ময়লা পরিষ্কারক হিসাবেই বোধকরি এ প্রাণিটি সৃষ্টি করেছেন আজ থেকে পঞ্চাশ কি ষাট বছর আগেও যখন সেনিটারী পায়খানা আবিষ্কৃত হয়নি তখন যে কোনো শহরের পায়খানার ধরন ছিল, পেছন থেকে মেথর এসে তা ট্যাঙ্কি ভরে নিয়ে যেত এবং শহরের উপকণ্ঠে কোথাও ফেলতো। যা ছিল শুকরদের পরম আনন্দ নিবাস এবং শেষ পর্যন্ত সেগুলোই সব বিষ্ঠার রুপান্তর ঘটতো। অনেকেই হয়তো এখন বিতর্কে নেমে পড়বেন উন্নত বিশ্বে এখন শুকরের পরিচ্ছন্ন খামার করা হয়েছে যেখানে ওগুলো লালিত পালিত হয়। তাদের এই অনেক উন্নত, স্বাস্থ্যকর খামারেও ওগুলো নোংরা। অত্যন্ত আনন্দের সাথেই ওরা ওদের নিজেদের ও সঙ্গিদের বিষ্ঠা নিয়ে ওদের চোখা নাক দিয়ে নাড়া চড়া করে আর উৎসবের খাদ্য হিসেবেই খায়। চ. শুকর নির্লজ্জতায় জঘন্য পশু ভু-পৃষ্ঠের ওপরে শুকর অশ্লীলতায় নির্লজ্জতম প্রাণী। একমাত্র পশু যেটা তার স্ত্রী-সঙ্গীর সাথে সংগম করার জন্য অন্যান্য পুরুষ-সঙ্গীদের ডেকে নেয়। আমেরিকার ও ইউরোপের অধিকাংষ মানুষের প্রিয় খাদ্য শুকর মাংস। খাদ্যভ্যাস আচরণে প্রকাশ পায়, বিজ্ঞানের এ সূত্রের জীবন্ত নমুনা ওরাই। ওদের প্রিয় সংস্কৃতি ডান্স পার্টি গুলোতে নেচে নেচে উত্তেজনার উত্তুঙ্গে উঠে একে অপরের সাথে ‘সোয়া’র জন্য বউ বদল করে নেয়। অনেকেই আবার জীবন্ত নীল ছবি চোখে দেখার জন্য স্ত্রীর সাথে সংগম করতে বন্ধু-বান্ধব ডেকে নেয়। তারপর এক নারী নিয়ে চলে অনেক পুরুষের সম্মিলিত লীলাখেলা। ধন্য উন্নত বিশ্ব, ধন্য তার সর্বোন্নত সংস্কৃতি।

জবাব:

একথা সত্য যে, আইনত মক্কা ও মদীনায় অমুসলিমদের প্রবেশানুমতি নেই। নিম্নে বর্ণিত বিষয়গুলো এই নিষিদ্ধতার নৈপথ্য কারণগুলো উদঘাটনে সহায়ক হবে।
ক. সেনানিবাস এলাকায় সকল নাগরিক প্রবেশানুমতি পায় না
আমি একজন ভারতীয় নাগরিক। তা সত্ত্বেও এদেশের এমন কিছু এলাকা আছে যেখানে আমার অবাধে প্রশোনুমতী নেই। যেমন সেনানিবাস। পৃথিবীর প্রত্যিকটি দেশই সাধারণ নাগরিক প্রবেশ করতে পারবে না এমন সব এলাকা রয়েছে। শুধু মাত্র সেনাবাহিনীর সদস্য এবং প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়াদির সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গ সে সব এলাকায় প্রবেশানুমতি পায়।
একইভাবে ইসলাম সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য একটি বিশ্বজনীন জীবন ব্যবস্থা। মক্কা ও মদীনা এ দুটি পবিত্র নগরিকে ইসলামের ক্যান্টনমেন্ট ধরা যেতে পারে। এখানে শুধু যারা তার অনুসারী এবং এর প্রতিরক্ষার সাথে জড়িত তারাই প্রবেশানুমতি পায় অর্থাৎ মুসলমানরা।সেনানিবাস এলাকায় সাধারণ নাগরিকের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপত্তি তোলা যে কোনো বিবেকবান মানুষের কাছেই অযৌক্তিক বলে গন্য হবে। একই ভাবে কোনো অমুসলিমের মক্কা-মদীনায় প্রশোধিকার নিয়ে প্রশ্ন তোলা সঙ্গত বলে বিবেচিত নয়।
খ.মক্কা ও মদীনায় প্রবেশের “ভীসা”
১. যখনি কেউ অন্য কোনো দেশে ভ্রমন করতে চায়। প্রথমে তাকে সেদেশের ভিসা পাবার জন্য আবেদন করতে হয়।অর্থাৎ সে দেশে প্রবেশের অনুমতি। প্রতিটি দেশের এ ক্ষেত্রে নিজ নিজ আইন নীতিমালা এবং কিছু শর্ত রয়েছে। এসব কিছু পূরণ না হলে তারা ভিসা দেবে না।
২. ভিসা দেবার ব্যাপারে অত্যন্ত কঠিনভাবে রক্ষণশীল দেশগুলোর মধ্যে সবার ওপরে আমেরিকা। বিশেষ ভাবে তৃতীয় বিশ্বের কোণো নাগরিককে ভিসা দেবার জন্য তাদের আছে অসংখ্য নিয়ম কানুন। আরো আছে দুর্লভ ও দুরুহ শর্তসমুহ যা সাধারণের আয়ত্বাধীন নয় কোনো ভাবেই।
৩. আমি সিঙ্গাপুর ভ্রমনে গিয়েছিলাম। তাদের অভিবাসন বা ইমিগ্রেশন ফর্মে উল্লেখ ছিল মাদক দ্রব্য বহনকারীর জন্য “মৃত্যুদন্ড”। এখন সিঙ্গাপুরে প্রবেশানুমতি চাইলে আমাকে তাদের যে আইন তা মেনেই নিতে হবে। আমি তো আর বলতে পারি না মৃত্যুদন্ড মধ্যযুগীয় নৃশংস বর্বরদের শাস্তি। তাদের সব নিয়ম-কানুন এবং শর্তগুলোকে যদি আমি মেনে নেই কেবলমাত্র তখনই আমার পক্ষে সে দেশের প্রবেশানুমতি পাওয়া সম্ভব।
৪. ভিসা-পৃথিবীর যে কোনো মানুষের জন্য মক্কা ও মদীনায় প্রবেশের অনুমতি পেতে হলে সর্ব প্রথম যে শর্তটি পুরণ করতে হবে তা হলো তার মুখে বলতে হবে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ” অর্থাৎ মানা যায় এমন কেউ নেই কিছু নেই আল্লাহ ছাড়া এবং মুহাম্মাদ (সঃ) তার প্রেরিত রাসূল।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন